শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার চতুর্থতম নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্র্থী বিশ্বজিৎ রায় ১৫৩ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে ৫ হাজার ৯১০টি। প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীকের বর্তমান মেয়র মোঃ মোশাররফ মিয়া পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৫৭ ভোট।
২৮ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে পৌরসভার ১২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন অফিসার ও দিরাই পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সফি উল্লাহ, উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ এমদাদুল হক, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ রেজাউল করিম, দিরাই থানার অফিসার ইন-চার্জ মোঃ আশরাফুল আসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিজিবি, এনএসআই-ডিজিএফআই সদস্য ও সাংবাদিকবৃন্দ।
এছাড়া জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের অনন্ত মল্লিক পেয়েছেন ৩৫৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী চামচ প্রতীকের এম আব্দুল কাইয়ুম পেয়েছেন ২৭৬ ভোট, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মোঃ ইকবাল হোসেন চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬০ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীকের রশিদ মিয়া পেয়েছেন ১৩৫ ভোট, জমিযত মনোনীত খেজুরগাছ প্রতীকের লোকমান আহমদ পেয়েছেন ৪৩৩ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলমেট প্রতীকের সফিকুল ইসলাম সফিক পেয়েছেন ২৮৩ ভোট। পৌরসভার মোট ভোটারের সংখ্যা ২১ হাজার ৩৭৯ জন। মোট ভোট পড়েছে ১৫ হাজার ১৪৩টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট হচ্ছে ১৫ হাজার ১১১টি, বাতিল হয়েছে ৩২টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭০ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
এদিকে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নতুন মুখের বিজয় হয়েছে বেশি। বর্তমান অনেক কাউন্সিলর নিশ্চিত পরাজয় জেনেই নির্বাচনে অংশ নেন নি, আবার অনেকেই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।
দিরাই উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৪ জন। এরমধ্যে টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের আশরাফ আহমদ ৬০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর পানির বোতল প্রতীকের মিয়াধন মিয়া পেয়েছেন ৫৫৪ ভোট, উটপাখি প্রতীকের মোঃ আবুল খয়ের পেয়েছেন ২৫৬ ভোট, গাজর প্রতীকের হারুনুর রশিদ পেয়েছেন ৩৪৯ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৭৬৭টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ১ হাজার ৭৬৬টি, বাতিল হয়েছে ১টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭২ দশমিক ৬০ শতাংশ।
২নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৪ জন। এরমধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর পানির বোতল প্রতীকের এ বি এম মাসুম ৮২০ পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী উটপাখি প্রতীকের নূরুল হক পেয়েছেন ৪৯৩ ভোট, বøাক বোর্ড প্রতীকের মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন পেয়েছেন ৩৭ ভোট, পাঞ্জাবী প্রতীকের লিকু দাস পেয়েছেন ৬৩ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৪১৭টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ১ হাজার ৪১৩টি, বাতিল হয়েছে ৪টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৬৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।
৩নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৫ জন। এরমধ্যে পাঞ্জাবী প্রতীকের মোঃ রেজাউল করিম ৩৫১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ডালিম প্রতীকের হরিধন রায় পেয়েছেন ৩০৮ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের মুর্শেদুর রহমান আঙ্গুর পেয়েছেন ২৭৪ ভোট, টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের মোঃ নূরুল হক মিয়া পেয়েছেন ১৫৯ ভোট, উটপাখি প্রতীকের রঞ্জু রায় পেয়েছেন ৪৯ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ১৪৩টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ১ হাজার ১৪১টি, বাতিল হয়েছে ২টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭০ দশমিক ৩০ শতাংশ।
৪নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৩ জন। এরমধ্যে ডালিম প্রতীকের জুয়েল মিয়া তালুকদার ৬৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর পানির বোতল প্রতীকের মোহাম্মদ মফিজুর রহমান তালুকদার পেয়েছেন ৬৪৯ ভোট, উটপাখি প্রতীকের সাবেক কাউন্সিলর মোঃ মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৩১৭ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৬২৯টির মধ্যে ভোট বাতিল হয়নি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।
৫নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বী করেছেন ৬ জন। এরমধ্যে ডালিম প্রতীকের রবীন্দ্র বৈষ্ণব ৫১৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের জিলাল মিয়া পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট, গাজর প্রতীকের জাহির আলম পেয়েছেন ৭৮ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের মুজিবুর রহমান পেয়েছেন ৯২ ভোট, উটপাখি প্রতীকের মোঃ আকমল হোসেন পেয়েছেন ৭৯ ভোট, পাঞ্জাবী প্রতীকের সাবেক কাউন্সিলর মোঃ এনামুল হক পেয়েছেন ২৭৩ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৩৮৪টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ১ হাজার ৩৮০টি, বাতিল হয়েছে ৪টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
৬নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৫ জন। এরমধ্যে টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের বর্তমান কাউন্সিলর পংকজ পুরকায়স্থ ৫১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী উটপাখি প্রতীকের মোঃ শাহজাহান সিরাজ পেয়েছেন ৫০৪ ভোট, পাঞ্জাবী প্রতীকের সাবেক কাউন্সিলর ইয়াহিয়া চৌধুরী পেয়েছেন ২২০ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের জগৎ জ্যোতি তালুকদার পেয়েছেন ৩৪৪ ভোট, বøাক বোর্ড প্রতীকের হোসেন আলী আকন্দ পেয়েছেন ৩০ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৬১৭টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ১ হাজার ৬১২টি, বাতিল হয়েছে ৫টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৬৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
৭নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৩ জন। এরমধ্যে পানির বোতল প্রতীকের লিটন রায় ৮৩৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী উটপাখি প্রতীকের নিলাদ্রী রায় পেয়েছেন ৬৬২ ভোট, ডালিম প্রতীকের গাজী রুহিনুর রহমান পেয়েছেন ৯১ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৫৯১টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ১ হাজার ৫৮৯টি, বাতিল হয়েছে ২টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৬৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
৮নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৪ জন। এরমধ্যে পাঞ্জাবী প্রতীকের মোঃ আবুল কাসেম ৬৮৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী উটপাখি প্রতীকের মোঃ সফিক মিয়া পেয়েছেন ৫৮০ ভোট, ডালিম প্রতীকের মোঃ সুয়েব আহমেদ চৌধুরী পেয়েছেন ৫৬০ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের রফিকুল হক পেয়েছেন ৫১২ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ২ হাজার ৩৩৭টির মধ্যে বৈধ সবই, প্রদত্ত ভোটের হার ৭২ দশমিক ২৪ শতাংশ।
৯নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৫ জন। এরমধ্যে উটপাখি প্রতীকের মোঃ লিয়াকত মিয়া ৬৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের মোঃ সবুজ মিয়া পেয়েছেন ৫২৩ ভোট, ডালিম প্রতীকের মোহাম্মদ শাহজাহান মাহমুদ পেয়েছেন ১৬৭ ভোট, পাঞ্জাবী প্রতীকের মোঃ বাচ্চু মিয়া তালুকদার পেয়েছেন ৪১৮ ভোট, পানির বোতল প্রতীকের মোঃ হেলাল আহমদ পেয়েছেন ৪৬৮ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ২ হাজার ২৫২টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ২ হাজার ২৪৮টি, বাতিল হয়েছে ৪টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৬৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
অন্যদিকে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবার ৩ জনই মুখ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৩ জন। এরমধ্যে আনারস প্রতীকের সাহার বানু ২ হাজার ৩৮২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর অটোরিকসা প্রতীকের খোশনামা বেগম পেয়েছেন ১ হাজার ৪৫৫ ভোট, চশমা প্রতীকের সৈয়দুন নেছা পেয়েছেন ৪৭৭ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৪ হাজার ৩২৭টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ৪ হাজার ৩১৪টি, বাতিল হয়েছে ১৩টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭০ দশমিক ১৮ শতাংশ।
৪, ৫ ও ৭নং নিয়ে সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ড, এ ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৪ জন। এরমধ্যে চশমা প্রতীকের মিনতী রাণী রায় ১ হাাজর ৭১৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী বলপেন প্রতীকের বর্তমান কাউন্সিলর মোছাঃ হেলেনা বেগম পেয়েছেন ১ হাজার ২৮৭ ভোট, অটোরিকসা প্রতীকের রেহেনা বেগম পেয়েছেন ৮৮০ ভোট, আনারস প্রতীকের সোনারা বেগম পেয়েছেন ৭১৫ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৪ হাজার ৬০৪টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ৪ হাজার ৫৯৯টি, বাতিল হয়েছে ৫টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৭২ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
৬, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ড, এ ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেছেন ৬ জন। এরমধ্যে দ্বিতল বাস প্রতীকের মোছাঃ হেলেনা বেগম খেলা ১ হাজার ৭৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী চশমা প্রতীকের মোছাঃ হালিমা বেগম পেয়েছেন ১ হাজার ৭৪৪ ভোট, টেলিফোন প্রতীকের অমিতা দেবী নাথ পেয়েছেন ৭৯৩ ভোট, বর্তমান কাউন্সিলর জবা ফুল প্রতীকের মাধবী দে পেয়েছেন ৬৯৩ ভোট, বলপেন প্রতীকের সাবেক কাউন্সিলর মোছাঃ শামিমা বেগম পারভীন পেয়েছেন ৭৪৩ ভোট, আনারস প্রতীকের সুমিত্রা দেবী পেয়েছেন ৪৫৮ ভোট। এ ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৬ হাজার ২১২টি, এরমধ্যে বৈধ ভোট ৬ হাজার ১৯১টি, বাতিল হয়েছে ২১টি, প্রদত্ত ভোটের হার ৬৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ।